কক্সবাজারে ৭১ লাখ নতুন বই বিতরণ

প্রকাশ: ২ জানুয়ারী, ২০১৮ ১১:৪৩ , আপডেট: ২ জানুয়ারী, ২০১৮ ০১:২৬

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


মহেশখালীতে বই উৎসব উদ্বোধন করছেন সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক।

শাহেদ মিজান, সিবিএন:
বছরের প্রথম দিনে বই উৎসব নিয়ে আনন্দে ভাসলো জেলা প্রতিটি বিদ্যালয়। সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই বই উৎসবে মেতে শিক্ষার্থীরা। নতুন বই পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়েছে তারা। বিদ্যালয় কেন্দ্রিক এই বই উৎসবকে কেন্দ্র করে জেলাজুড়ে এক উৎসবের পরিবেশ বিরাজ করে। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে নতুন বছরে পাঠ কার্যক্রম শুরু হলো।

জেলা প্রশাসনের সাধারণ শাখা সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের সাথে একযোগে কক্সবাজারে প্রতিটি প্রাথমিক, নিন্মমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব উদযাপন হয়। তবে কিছুটা বাধ সাধে বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে খোলা আকাশের নিচে উৎসবের আড়ম্বরপূর্ণ কোনো আয়োজন করা না গেলেও স্কুলে স্কুলে চার দেয়ালের মাঝেই চলে বই উৎসব। বই উৎসবে শিক্ষার্র্থীদের মাঝে নতুন বই বিতরণ করা হয়েছে। জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ৭১ লাখ ২১ হাজার ৪৪৯টি বই বিতরণ করা হয়েছে। এর মাঝে প্রাথমিকে সাড়ে ৩ লাখ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৮ লাখ ৪৬ হাজার ৪৪৯টি বই বিতরণ করা হয়।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদুল আজম জানান, প্রাথমিকের জন্য জেলায় এসে পৌঁছেছে ১৮ লাখ ১২ হাজার ৩৯০টি বই। ৯০.৫০ শতাংশ বই বিদ্যালয়ে বই পৌঁছে দেয়া হয়েছে। জেলার ৬৩৪টি স্কুলে বই বিতরণ করা হয়েছে। এখানে ইবতেদায়ি, মাদ্রাসাসহ বিশেষ শ্রেণির শিশুদের জন্য আলাদা আলাদা বই আছে বলেও জানান তিনি।

কক্সবাজার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে ৫২ লাখ ৭৫ হাজার বই বিতরণ করা হচ্ছে। এখানে নিয়মিত স্কুলের বই ছাড়াও ভোকেশনাল, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীসহ সব ভার্সনের বই আছে।

মহেশখালী উপজেলার টাইমবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব।

স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলাদাভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে বই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন। একই সাথে জেলা প্রশাসক কক্সবাজার সদর উপজেলার বই উৎসব উদ্বোধন করেন। ঈদগাঁওতে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। মহেশখালীতে বই উৎসব উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। তিনি বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের বই তুলে দিয়েছেন। কক্সবাজার সদরে শহরে উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান। কুতুবদিয়ায় উপজেলা পর্যায়ে কুতুব উচ্চ বিদ্যালয়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী। চকরিয়ায় উপজেলা পর্যায়ে হাজী ইলিয়াছ এমপি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য হাজী মোহাং ইলিয়াছ। পেকুয়ায় উপজেলা পর্যায়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু। উখিয়ায় উপজেলা পর্যায়ে উখিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান। টেকনাফে উপজেলা পর্যায়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণব চাকমা। রামুতে উপজেলা পর্যায়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম।

এদিকে নূতন বই পেয়ে মহা খুশিতে মেতে উঠেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তারা বই নানা উল্লাস ও আনন্দ উদযাপন করছে। দলবেঁধে গান গেয়ে, হৈ-হুল্লোড় আর নানা উচ্ছ্বাসে তারা আনন্দ উৎযাপন করেছে।

মহেশখালীর হোয়ানক টাইমাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জিসমান করিম বলেন, ‘আমার দু’ ময়ে স্কুলে পড়ে। আগে প্রতি বছরের শুরুতে তাদের বই কিনে দিতে হিমশিম খেতে হতো। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছেলে-মেয়েদের বিনামূল্যে বই দিয়ে আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য খুবই উপকার হচ্ছে।’

জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘সরকারের লক্ষ্য প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন নতুন বই পায়। সে লক্ষ্যকে সামনে বছরের প্রথম দিনে বই উৎসব উদযাপন করা হয়েছে। এই বই উৎসবের মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে তোলে দেয়া হয়েছে নতুন বই।’